প্রচ্ছদ ধর্ম ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে যতদিন সময়মতো ইফতার করবে: বুখারি

ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে যতদিন সময়মতো ইফতার করবে: বুখারি

সিয়াম আত্মশুদ্ধির পাশাপাশি নিয়ম-শৃংখলা বোধ তৈরি করে। রোজাদার তাই নিয়ম করে ইফতার ও সেহরি খেয়ে থাকে।

এ সম্পর্কে হজরত ইয়ালা বিন মুররাহ রাজি থেকে বর্ণিত, রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহতায়ালার কাছে তিনটি বস্তু অধিক পছন্দনীয়।

এক. সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তাড়াতাড়ি ইফতার করা।

দুই. সেহরি দেরিতে খাওয়া।

তিন. নামাজে হাত বেঁধে আল্লাহর ধ্যান-খেয়ালে আদবের সঙ্গে দাঁড়িয়ে থাকা।

রাসূলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, আহলে কিতাব আর আমাদের মুসলমানদের রোজার মধ্যে শুধু সেহরি খাওয়াই পার্থক্য।অর্থাৎ তারা সেহরি খায় না আর আমরা সেহরি খাই। (মুসলিম : ১৮৪৩, তিরমিজী: হা. ৬৪২)

যদি ক্ষুধা না থাকে আর খাওয়ারও ইচ্ছা না থাকে, তারপরও সুন্নতের ওপর আমল করার জন্য দুই একটা খেজুর হলে খেয়ে নিতে হবে বা এক ঢোক পানি হলেও পান করতে হবে। তাহলে সুন্নতের ওপর আমল করা হয়ে যাবে।

রাসূলুল্লাহ (সা.) আরও বলেন, ‘সেহরি খাওয়ায় বরকত রয়েছে।’ অর্থাৎ শরীরে প্রফুল্লতা ও শক্তি থাকে। (বুখারি, মুসলিম : হা. ১০৯৫)রাসূলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, তোমরা ইফতারের সময় হওয়ামাত্র ইফতার করে নাও। এতটুকু বিলম্ব করো না। হাদিস শরিফে বলা হয়েছে, মানুষ ততদিন কল্যাণের মধ্যে থাকবে যতদিন তারা ইফতারের সময় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ইফতার করে নেবে। (বুখারি ও মুসলিম)

ইফতারের সময় এ দোয়া পড়তে হয়, আল্লাহুম্মা লাকা সুমতু ওয়া আলা রিজকিকা আফতারতু অর্থাৎ ‘হে আল্লাহ! তোমার জন্যই রোজা পালন করলাম, আর তোমার প্রদত্ত রিজিক দিয়েই ইফতার করছি।’রাসূলুল্লাহ (সা.) কয়েকটি তাজা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা খেজুর না পেলে শুকনো খেজুর, অর্থাৎ খোরমা দিয়ে ইফতার করতেন। আর যদি তাও না পেতেন, তাহলে কয়েক ঢোক পানি পান করে নিতেন।

হুজুর (সা.) বলেছেন, ‘ইফতার করার সময় রোজাদারের দোয়া কবুল হয়ে থাকে।’ (আবু দাউদ)ইফতারের আগ মুহূর্তটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়। দোয়া কবুল হওয়ার অন্যতম সময়।

বিদায় হজের ভাষণে রাসূলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেছিলেন, ‘দাস-দাসীদের প্রতি সর্বদা সদ্ব্যবহার করবে। তাদের ওপর কোনোরকম অত্যাচার করবে না। তোমরা যা খাবে তাদেরও তাই খাওয়াবে; যা পরবে তাই পরাবে। ভুলে যেও না তারও তোমাদেরই মতো মানুষ।’

অতএব আমরা যখন ঘরে ইফতার করি তখন যেন বাসার গৃহকর্মী ও অধীনস্থদের নিয়ে পরিবারের সবাই একসঙ্গে ইফতার করি। কোনো রোজাদারকে ইফতার করানো অত্যধিক ফজিলতের কারণ।