প্রচ্ছদ সারাদেশ রংপুর বিভাগ ঠাকুরগাঁও  জেলা হানাদার মুক্ত হয় ৩ ডিসেম্বর

ঠাকুরগাঁও  জেলা হানাদার মুক্ত হয় ৩ ডিসেম্বর

এম এ অারিফ স্টাফ রিপোর্টার।। ১৯৭১ এর এই দিনে ঠাকুরগাঁও পাকিস্তানী হানাদার মুক্ত হয়। সেই সময় ঠাকুরগাঁও ছিল উত্তরের প্রত্যন্ত অঞ্চল দিনাজপুর জেলার একটি মহকুমা। বর্তমান ঠাকুরগাঁও এবং পঞ্চগড় জেলার ১০টি থানা ছিল ঠাকুরগাঁও মহকুমার অন্তর্গত।
জেলা উদীচী শিল্পাগোষ্ঠীর অায়োজনে শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের স্মরণে হানাদার মুক্ত দিবস পালন করা হয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে একটি র্যালী বের হয়ে একই স্থানে এসে শেষ হয়। দিবসটি পালনে সরকারি উদ্যেগ ও পৃষ্ঠপোষকতার দাবি মুক্তিযোদ্ধা সহ সকলের।
জেলা মহুকুমা ছিল ৬ নম্বর সেক্টরের অন্তভুর্ক্ত। ৭১ এ হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে ঠাকুরগাঁওবাসী গড়ে তুলেছিলো দুর্বার প্রতিরোধ। এই প্রতিরোধের কারণেই ১৪ই এপ্রিল পর্যন্ত হানাদার বাহিনী প্রবেশ করতে পারেনি ঠাকুরগাঁওয়ের মাটিতে।
১৫ই এপ্রিল ১০টি ট্রাক ও ৮টি জিপে করে মুহুর্মুহু শেল বর্ষণ করতে করতে ঠাকুরগাঁও শহরে ঢুকে পড়ে হানাদার বাহিনী। তবে তেতুলিয়া থানাকে কেন্দ্র করে ১৫০ বর্গমাইলের ১টি মুক্তাঞ্চলকে কেন্দ্র করে গঠিত ১০ হাজার মুক্তিযোদ্ধা সংগঠিত হয় এবং পাক-বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।
২৯ নভেম্বর পঞ্চগড় হাতছাড়া হওয়ার পর পাকবাহিনীর মনোবল ভেঙে গেলে তারা পিছু হটে ঠাকুরগাঁওয়ে ঘাঁটি স্থাপন করে। পাকসেনারা ৩০ নভেম্বর ভুল্লী ব্রিজটি বোমা মেড়ে উড়িয়ে দেয় এবং সালন্দর এলাকায় বিভিন্ন জায়গায় মাইন পেতে রাখে। মিত্রবাহিনী ভুল্লী ব্রিজ মেরামত করে ট্যাঙ্ক পারাপারের ব্যবস্থা করে ঠাকুরগাঁও শহরের দিকে অগ্রসর হয়।
এলাকাবাসী জানান, ঠাকুরগাঁও সদরের শুখানপুকুরী, জাটিভাঙ্গা ও জগন্নাথপুরসহ অাশপাশের নিরস্ত্র বাঙালির ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে হানাদার বাহিনী। বোমা মেরে উড়িয়ে দেয় বিভিন্ন ব্রীজ-কালভার্ট। বাড়িঘরে অাগুন দিয়ে হত্যা করা হয় অসংখ্য মানুষ। প্রতিরোধ গড়ে তোলেন মুক্তিযোদ্ধারা। দীর্ঘ ৯ মাস রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর শত্রুমুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও। শহীদ হন জেলার অন্তত ২৫ হাজার মানুষ।
২ ডিসেম্বর রাতে প্রচণ্ড গোলাগুলি ও সম্মুখ যুদ্ধের পর শত্রুবাহিনী পিছু হটে ২৫ মাইল নামক স্থানে যায়। ৩ ডিসেম্বর ভোর রাতে মিত্রবাহিনী বিজয়ীর বেশে ঠাকুরগাঁও এ প্রবেশ করে এবং মুক্ত হয় ঠাকুরগাঁও।
জেলা প্রশাসক ড.কেএম কামরুজ্জামান সেলিম বলেন, ৩ ডিসেম্বর ঠাকুরগাঁও হানাদার মুক্ত হয়েছিল। সে লক্ষে এ বছর দিবসটি নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার জন্য পালন করা হয়। মুক্তিযুদ্ধের সময় যারা শহীদ হয়েছে তাদের স্ত্রীকে বিধবা ভাতা দেয়ার জন্য সরকার কাজ করে যাচ্ছ। দ্রুত তাদেরকে বিধবা ভাতা দেওয়া হবে।