প্রচ্ছদ সারাদেশ রাজশাহী বিভাগ জয়পুরহাটে পান চাষে ঝুকছেন কৃষকরা

জয়পুরহাটে পান চাষে ঝুকছেন কৃষকরা

এস.ডি সাগর, জয়পুরহাটঃ আদিকাল থেকেই পান খাওয়ার রীতি চলে আসছে। সনাতন ধর্মালম্বীদের বিভিন্ন পুজো ও বিয়েতে পান পাতার প্রচলন দেখা যায়। খালি পানের স্বাদ ভাল না হলেও চুন-সুপারি দিলে ব্যাপারটা যেন একেবারেই জমে যায়। অনেকেই পান খাওয়া স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর মনে করলেও আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে এর অনেক উপকারিতাও আছে। সমাজে শুধু এটা স্বভাব হিসেবেই নয়, ঐতিহ্যগতভাবে শখ, ভদ্রতা এবং আচার-আচরণের অংশ হিসেবেই পানের প্রচলন চলে আসছে।

জয়পুরহাটে পান চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে এই চাষ। তবে কৃষকরা বলছেন, পান বিক্রির জেলায় নির্ধারিত কোন হাট নেই। তাই কিছুটা দুর্ভোগের মধ্যে অন্য জেলায় পান বিক্রি করতে হয়। তাদের অভিযোগ সরকারীভাবে ঋণ ও প্রশিক্ষনসহ অন্যান্য সহযোগীতা না পাওয়ায় কিছুটা বিপাকে তারা।

১৯৯০ সালের দিকে জয়পুরহাটের পাঁচবিবি উপজেলার চেঁচরা গ্রামে আফছার আলী তার নিজ উদ্যোগে ১৫ শতক জমিতে প্রথম শুরু করেন পানের চাষ। অন্য ফসলের চেয়ে এই চাষ লাভ জনক হওয়ায় তার দেখাদেখি বিভিন্ন এলাকায় ধীরে ধীরে ছড়িয়ে যায় পানের চাষ।

বর্তমানে জয়পুরহাট সদরের পুরানাপৈল, তাজপুরসহ পাঁচবিবি উপজেলার সীমান্ত ঘেঁষা চেঁচরা, সালুয়া, বাগজানা, ত্রিপুরা, রতনপুর, আটাপাড়াসহ প্রায় শতাধিক গ্রামে নিজ মেধা ও উদ্যোগে পান চাষ করে ব্যাপক সফলতা পাচ্ছেন কৃষকরা। প্রকারভেদে প্রতি পোয়া পান বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। একটি পান গাছ একটানা ফলন দেয় প্রায় ১৫ থেকে ২০ বছর, রোগ বালাইও কম। প্রথম পর্যায়ে বরজে বিঘাপ্রতি কৃষকের খরচ হয় প্রায় ১ লাখ টাকা, তারপর প্রতি বছরই বরজের পরিচর্চা ও সার হিসেবে সরিষার খৈল ২-৩ মন ব্যবহার করে পান বিক্রি হচ্ছে ২ থেকে আড়াই লাখ টাকা।

সদর উপজেলার পুরানাপৈল এলাকার পান চাষী মিজানুর রহমান, পাঁচবিবির চেঁচরা গ্রামের বেলাল হোসেন, আইয়ুব আলী, সালুয়া গ্রামের আখের আলীসহ আরো অনেকে বলেন, অন্য ফসলের চেয়ে পান করে আমরা ব্যাপক লাভবান হচ্ছি। কিন্তু আমাদের সব চেয়ে বড় সমস্যা পান বিক্রির জন্য জয়পুরহাট জেলা জুড়ে কোন হাট নেই। তাই পান বিক্রির জন্য অনেক কষ্ট করে দিনাজপুর জেলার হাকিমপুর বাজারে যেতে হয়। এতে আমরা পান চাষীরা ন্যায্য মুল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছি। তাই সরকারের কাছে পান চাষে প্রশিক্ষন ও ঋণ সহায়তা সহ স্থানীয় একটি হাটের দাবী করছি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সুধেন্দ্রনাথ রায় জানান, এবার জেলায় ৩০ হেক্টর জমিতে পানের চাষ হয়েছে। পান চাষে কৃষকদের প্রযুক্তিগত সহয়তা দেওয়া হচ্ছে।