প্রচ্ছদ সারাদেশ রাজশাহী বিভাগ জয়পুরহাটে অবৈধভাবে গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইটভাটা, হুমকির মুখে ফসলী জমি

জয়পুরহাটে অবৈধভাবে গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইটভাটা, হুমকির মুখে ফসলী জমি

এস.ডি সাগর, জয়পুরহাটঃ প্রতি বছরই সরকারী কোন নিয়ম না মেনেই লাইসেন্স ও পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই জয়পুরহাটে অবৈধভাবে গড়ে উঠছে নতুন নতুন ইটভাটা। এতে হুমকির মুখে পড়ছে আশপাশের জমির ফসল ও পরিবেশ। ছোট রাস্তায় মেসি-ট্রাক্টরে ভাটার মালামাল ও মাটি সরবরাহের কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। এদিকে ভাটা নির্মানের ২ মাসের মধ্যে ১জন নিহত ও কয়েক জন আহত হয়েছেন। তবে অভিযোগ করেও প্রশাসন কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় ক্ষুব্ধ স্থানীয়রা।
নিয়ম অনুযায়ী কোন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান, বসত বাড়ি ও ফসলী জমির আশেপাশে ইটভাটা নির্মান করা যাবেনা, এমন সরকারী নীতিমালা থাকলেও কিন্তু তা মানছেন না এলাকার প্রভাবশালী ভাটা মালিকরা। জয়পুরহাট সদরের ভাদসার সগুনা চারমাথা দিওর এলাকার বাজারের কাছাকাছি মুন ব্রিকস নামে নতুন একটি ইটভাটা গড়ে তুলছেন বাচ্চু রহমান ও পাশের ইউনিয়নের একজন প্রভাবশালী চেয়ারম্যান। এদিকে ভাটা নির্মানের মালামাল সরবরাহের সময় মেসি-ট্রাক্টরে দুর্ঘটনায় প্রায়ই হতাহত হচ্ছেন সাধারন মানুষ। এলাকাবাসীরা অবিলম্বে এই অবৈধ ভাটা বন্ধের দাবী জানিয়েছেন। গত ০৫/০৮/১৮ ইং তারিখে জয়পুরহাট জেলা প্রশাসক বরাবর ভাটা মালিক ২জনকে বিবাদী করে লিখিত অভিযোগ করেছেন ভাটা এলাকার হেলাল হোসেন। অভিযোগে তিনি বলেছেন, আমার বাড়ীর মাত্র ২০ গজ দুরেই ভাটা নির্মান করা হচ্ছে। বারবার আমি সহ স্থানীয় বহু মানুষ ভাটা নির্মানে নিষেধ করলে ভাটা মালিকরা প্রভাবশালীরা হওয়ায় তারা কাউকে তোয়াক্কা না করেই ভাটা নির্মানের কাজ চালিয়েই যাচ্ছে। এছাড়াও ভাটার নির্মানের মালামাল সরবরাহের গাড়িতে একজন নিহত ও একজন পঙ্গু অবস্থায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এই ভাটার কারণে আমাদের অপূরণীয় ক্ষতি হবে। ভাটার চারিদিকে ফসলী জমির ধান, গম, ভুট্টা, মরিচ, পেঁয়াচ, হলুদ, কলা, পটল, পাটসহ ফসল বিনষ্ট হচ্ছে এবং হবে। বাধ্য হয়ে আমি গ্রামবাসীর পক্ষে জেলা প্রশাসকের কাছে ভাটা বন্ধের জন্য লিখিত অভিযোগ করি। কিন্তু জেলা প্রশাসকের নিকট অভিযোগ করার পরও প্রভাবশালী ভাটা মালিক ভাটা নির্মান কাজ অব্যাহত রেখেছে। এমতাবস্তায় আমরা চরম হতাশ।
নির্মানাধীন মুন ব্রিকসের মালিক মোঃ বাচ্চু রহমান বলেন, পরিবেশ ছাড়পত্র এখনও পাইনি। লাইসেন্স এর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের নিকট প্রস্ততি চলছে।
এ ব্যাপারে জয়পুরহাট সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আমিনুল ইসলাম বলেন, ভাটা নির্মানের অনিয়ম বিষয়ে যদি কোন অভিযোগ আসে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আ.ত.ম আব্দুল্লাহেল বাকী জানালেন, আমাদের নিকট অবৈধভাবে ভাটার নির্মানের বিষয়ে লিখিত অভিযোগ এসেছে। সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে তদন্তের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পরিবেশ ছাড়পত্র না থাকলে মোবাইল কোর্ট সহ প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ফসলী জমি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় যত্রতত্র প্রভাবশালীদের এসব অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করতে প্রশাসন দ্রুত পদক্ষেপ নিবেন এমনটাই আশা করছেন ইটভাটা এলাকার সাধারণ মানুষ।