প্রচ্ছদ শিক্ষাঙ্গন জবির নতুন ক্যাম্পাসের উন্নয়নে ১৮৬২ কোটি ৯৮ লাখ টাকার প্রকল্প

জবির নতুন ক্যাম্পাসের উন্নয়নে ১৮৬২ কোটি ৯৮ লাখ টাকার প্রকল্প

জবি সংবাদদাতা : জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) দ্বিতীয় ক্যাম্পাসের বা নতুন ক্যম্পাসের ভূমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের জন্য উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) সাবমিট করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে ভূমি অধিগ্রহণ এবং ভূমির উন্নয়নের জন্য ১৮৬২ কোটি ৯৮ লাখ ৩৯ হাজার টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে। গত ৫ জুন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের কাছে এ প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান জানান, উন্নয়ন প্রকল্পের মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণ, নিচু জমি ভরাট করা, পুকুর খনন, গাছ লাগানো এবং প্ল্যানিং ও ইঞ্জিনিয়ার সেকশনের জন্য একটি ভবন থাকবে। এছাড়া এ প্রকল্পের মধ্যে অত্যাধুনিক বিশ্ববদ্যিালয়ের মাস্টার প্ল্যান অর্ন্তভূক্ত রয়েছে। সৌন্দর্য্য বর্ধন ও প্রাকৃতির পরিবেশের জন্য ক্যাম্পাসে সবুজ গাছপালার এবং লেক থাকবে। পুরো ক্যাম্পাসটি লেক দ্বারা দুটি অংশে বিভক্ত হবে যা ৫টি ব্রিজ দিয়ে সংযুক্ত করা হবে।

ভিসি বলেন, ১ জুলাই ২০১৮ থেকে এ প্রকল্পের মেয়াদ শুরু হচ্ছে। ২০২০ সালের জুনে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হবে। এ দুই বছরের মধ্যে এ প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। বাস্তবায়নে যে ব্যয় ধরা হয়েছে তা আরো বাড়তে পারে বলে মনে করছেন তিনি।

রেজিষ্ট্রার ওহিদুজ্জামান বলেন, প্রকল্পটির ব্যয় ১৮৬২ কোটি ধরা হলেও তা বেড়ে ২০০০ কোটি ছাড়িয়ে যেতে পারে।

জানা গেছে, ২০১৭ সালের ১১ জুলাই একনেক সভায় ২৮৭ কোটি টাকা ব্যয়ে সাড়ে সাত একর জায়গায় একটি ২০ তলা একাডেমিক ভবন এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামে এক হাজার সিটের আবাসিক ছাত্র হলের জন্য ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকতর উন্নয়ন’ শিরোনামের একটি প্রকল্প উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সদস্য নজরুল ইসলাম।

প্রকল্পের প্রস্তাবনা দেখার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছিলেন, এই ৭ একর, ১০ একর দিয়ে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্যার সমাধান হবে না। পুরান ঢাকা যানজট এবং ঘিঞ্জি এলাকা। একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য সেটি অনুপযুক্ত জায়গা। আর জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের জন্য খুচরা একটি হল ও একাডেমিক ভবন দিয়ে কাজ হবে না। বিশ্ববিদ্যালয়কে আন্তর্জাতিক মানের করে গড়ে তুলতে হবে, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল, ক্যাম্পাস, একাডেমিক ভবন, লাইব্রেরিসহ সব ধরনের সুযোগ সুবিধা থাকতে হবে। প্রধানমন্ত্রী এই বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যত জমি লাগবে, যত টাকা লাগবে, তার জোগান দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন। একটি পূর্ণাঙ্গ পরিকল্পনা তৈরি করে তাঁর কাছে উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

নির্দেশের এক বছরের মধ্যে উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) পাঠিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। ২০০ একর জমি অধিগ্রহণ ও উন্নয়নের এ প্রস্তাবটি একনেক সভায় উপস্থাপন করা হবে।

এ বিষয়ে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীজানুর রহমান বলেন, জমি অধিগ্রহণের জন্য সব সংস্থার অনুমোদন নেয়া হয়েছে। এখন ভূমি মন্ত্রণালয়ের সেন্ট্রাল ভূমি কমিটির সভায় অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। শিগগিরই জমির অনুমোদন হবে এবং জবির দ্বিতীয় ক্যম্পাসের জন্য ১৮৬২ কোটি ৯৮ লাখ ৩৯ হাজার টাকার প্রকল্প নির্দিষ্ট সময়ে শেষ হবে বলে আশা করেন তিনি।

ছাত্রলীগের সভাপতি তরিকুল ইসলাম বলেন, শিক্ষাবন্ধন নেত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য স্থায়ী সমাধান দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী কখনো কথার খেলাপ করেন না, তাঁর ঘোষণার বাস্তবায়ন শুরু হয়েছে। আমরা আনন্দিত, যুগান্তকারী পদক্ষেপ নেয়ার আন্তরিক ধন্যবাদ জানান তিনি।

ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ জয়নুল আবেদিন রাসেল বলেন, প্রধানমন্ত্রী সবচেয়ে ভালো বোঝেন- কোথায় কি দরকার। অত্যাধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য যত টাকা, যত জমি দরকার তিনিই নিজ থেকে দিতে চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীর আন্তরিকতায় শিগগিরই বিশ্বমানের একটি বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে উঠবে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়।