প্রচ্ছদ শিক্ষাঙ্গন ‘কোটা আন্দোলন নিষিদ্ধ নয়, গ্রেপ্তার কেন?’

‘কোটা আন্দোলন নিষিদ্ধ নয়, গ্রেপ্তার কেন?’

কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সারাদেশের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ওপর হামলাকারীদের শনাক্ত করে দ্রুত বিচারের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা। মঙ্গলবার সকাল ১১টার দিকে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে আয়োজিত মানববন্ধন থেকে তারা এই দাবি জানান।

সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, ছাত্রলীগ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা চালাচ্ছে। তারা আমাদের শিক্ষকদেরও লাঞ্ছিত করেছে। এটি একটি জঘন্য ঘটনা। আমরা শিক্ষক শিক্ষার্থীরা কেউ নিরাপদে নেই। আমরা এই হামলাকারীদের বিচার চাই।তিনি আরও বলেন, আমার বিভাগের শিক্ষার্থী মশিউরকে কোনও অপরাধ ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তিনি কোটা আন্দোলনে গিয়েছিল, এজন্য তাকে গ্রেপ্তার করে রিমান্ডে নেয়া হতে পারে না। কারণ কোটা আন্দোলনতো কোনও নিষিদ্ধ আন্দোলন নয়। তাহলে গ্রেপ্তার কেন? মশিউরের নামে কোনও অভিযোগ নেই। আমরা কেউই মশিউরকে ছাড়া ক্লাসে যাইনি, যাবোও না।

শান্তি ও সংঘর্ষ অধ্যয়ন বিভাগের শিক্ষার্থী রাশেদুল ইসলাম বলেন, আমাদের নিজেদের ক্যাম্পাসেই আমরা নিরাপদ নই। যাকে যেখানে পাচ্ছে তাকে মারধোর করা হচ্ছে। আমাদের শিক্ষকরাও এখন নিরাপদ নয়, এমনকি আমাদের প্রক্টর স্যারকেও হুমকি দেয়া হয়েছে। আমরা ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা চাই। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী আনতারা ইসলাম বলেন, আজকে যদি এই মুহূর্তে আমরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করি তাহলে আমাদের পরবর্তী প্রজন্ম চিন্তা করবে, বাংলাদেশের মতো একটা গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে কিভাবে আমরা বাক-স্বাধীনতার অধিকার হারিয়েছি।অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক রুশাদ ফরিদী বলেন, শিক্ষার্থীরা নিজের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। ক্যাম্পাসে ত্রাসের রাজত্ব সৃষ্টি হয়ে, এই রাজত্ব ভেঙে দিতে হবে। ছাত্রলীগ বিশেষ কারো দ্বারা ব্যবহৃত হচ্ছে। সেই মূল হোতাদের খুঁজে বের করতে হবে। ছাত্রলীগ যারা করে তারাও আমাদের ছাত্র তাদেরকে ঘৃণা করে দূরে রাখা যাবে না। তাদের সাথেও সুসম্পর্ক রাখতে হবে।  বিভিন্ন হলে হলে ছাত্রলীগের নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একটা ফার্স্ট ইয়ারের ছেলে যখন গণরুমে আসে তখন, অর্থাৎ গণরুমের মধ্য দিয়ে যেতে হয় সেটা ছাত্রলীগের ক্যাডার তৈরি করার একটা ট্রেনিং ক্যাম্প। তাকে যে অবস্থায়, যে টর্চারের মধ্য দিয়ে যেতে হয় তাতে তার মন-মানসিকতারই পরিবর্তন হয়ে যায়। সে আর স্বাভাবিক ছাত্র থাকে না। দুঃখের বিষয় যারা প্রশাসনে আছে সেই আমরা শিক্ষকরাই কিন্তু একটা ‘ছায়া প্রশাসন’ তৈরি করে দিয়ে ছাত্রলীগকে এটা করতে দেই দিনের পর দিন। আমরা যদি এই সমস্যার মূলে যেতে না পারি তাহলে এমন ঘটনা বারবার ঘটবে।