প্রচ্ছদ সারাদেশ ঢাকা বিভাগ কোটালীপাড়ায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ডগলাস মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়

কোটালীপাড়ায় ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে ডগলাস মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়

sdr

গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়ায় প্রধানশিক্ষকের আসন নিয়ে কাড়াকাড়িতে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছেছে ডগলাস মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক দু’পক্ষ থেকেই চলছে অভিযোগের কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যেও শুরু হয়েছে দলাদলি। চরমভাবে ব্যাহত হচ্ছে বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম।
সরেজমিন গিয়ে জানা যায়, বিদ্যালয়টি ১৯৭৩ সালে বিশ্ব মুক্তিবাণী সংস্থার মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৯৮৪ সালে সরকারী এমপিও-ভুক্ত হয় এবং সেই থেকে সরকারি বিধিমালা অনুযায়ী পরিচালিত হয়ে আসছে। গত বছরের মাঝামাঝি বিদ্যালয়ের প্রধানশিক্ষক ঝুনু যোয়ান্না থেটা অবসরে গেলে ওই আসনে কে বসবেন, এ নিয়ে মূলত: যতো গন্ডগোলের সূত্রপাত। বিদ্যালয়ের ৭-সদস্যবিশিষ্ট ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও বিশ্ব মুক্তিবাণী সংস্থার নির্বাহী পরিচালক ন্যান্সি ব্যানার্জী চান তার পছন্দের কাউকে ওই আসনে বসাতে; কিন্তু সভাপতিকে উপেক্ষা করে স্থানীয় প্রভাব খাটিয়ে ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষকের দায়িত্ব নিয়ে নেন সহকারী প্রধানশিক্ষক সেলিম মোল্যা। কিন্তু বিষয়টি সেখানে থেমে থাকেনি। যে যার মতো করে দৌড় শুরু করেন প্রশাসনসহ শিক্ষা অধিদপ্তরে।
বিগত ৭-৮ মাসের সেই দৌড়ে একদিকে, বিদ্যালয়ের সভাপতি ন্যান্সি ব্যানার্জী নানা অভিযোগ এনে কয়েকবার কারণ দর্শানোর নোটিস করেছেন, থানায় জিডি করেছেন; কিন্তু সেগুলোর কোন তোয়াক্কা না করেই ভারপ্রাপ্ত প্রধানশিক্ষক হিসেবে বিদ্যালয় পরিচালনা করছেন সহকারী প্রধানশিক্ষক সেলিম মোল্যা। অন্যদিকে, শিক্ষা বোর্ডও কয়েক দফায় প্রধানশিক্ষকের দায়িত্ব হস্তান্তর সংক্রান্ত বিষয়ে সুস্পষ্ট নির্দেশ দেয় সভাপতিকে; যেগুলোর কোন তোয়াক্কা করেননি বিদ্যালয়ের সভাপতি। এভাবে একজন আরেকজনকে দমিয়ে নিজের অবস্থান টিকিয়ে রাখতে যতোভাবে কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি করা যায়, তা নিয়ে তারা এখনও ব্যস্ত রয়েছেন।
এলাকার অভিভাবকরা বলছেন, সভাপতি ও সহকারী প্রধানশিক্ষকের এই কাদা ছোঁড়াছুঁড়ির নানা প্রভাব গিয়ে পড়ছে বিদ্যালয়সহ আশপাশের মানুষের উপর। কিছু সাম্প্রদায়িক উষ্কানীও ছড়িয়ে পড়ছে। বিদ্যালয়ে ক্লাসও ঠিকমতো হচ্ছে না। ব্যাহত হচ্ছে শিক্ষার পরিবেশ। অন্যবারের তুলনায় এবারে বিদ্যালয়ের ফলাফল চরম হতাশাজনক। এবারের জেএসসি’তে বিদ্যালয় থেকে শতাধিক পরীক্ষার্থী অংশ নিলেও জিপিএ-৫ পায়নি একজনও। অভিভাবকদের আশংকা, বিদ্যালয়ে এ মুহূর্তে যে রাজনীতি চলছে তাতে বোর্ড পরীক্ষায় ছেলেমেয়েরা পাশই করতে পারবে না। তাই বিদ্যালয়ের সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে তারা সংশ্লিষ্ট বিভাগের জরুরী পদক্ষেপ কামনা করছেন।
সহকারী প্রধানশিক্ষক সেলিম মোল্যা জনকণ্ঠকে বলেছেন, সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী তিনি প্রধানশিক্ষকের দায়িত্বভার নিয়েছেন এবং শিক্ষকদের নিয়ে শুধুমাত্র ক্লাশ ও পাঠদানের কাজটুকু চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরও জানান, গত ১০ জানুয়ারি শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক প্রফেসর প্রীতিশ কুমার সরকার স্বাক্ষরিত এক পত্রে বোর্ডের আদেশসমূহ পালনসহ জরুরী ভিত্তিতে বিদ্যালয়ে প্রধানশিক্ষক নিয়োগের নির্দেশ পাওয়া গেছে। এ নিয়োগ প্রক্রিয়াটি শেষ হলে বিদ্যালয়টি আবার প্রাণ ফিরে পাবে।