প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্র বন্ধে আগ্রহী

উত্তর কোরিয়া ক্ষেপণাস্ত্র কেন্দ্র বন্ধে আগ্রহী

উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং-উন দেশটির প্রধান ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা কেন্দ্রগুলো বন্ধ করতে সম্মতি দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইন।

উত্তর কোরিয়ার রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে গতকাল বৈঠক শেষে কোরীয় উপদ্বীপে নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে দুই দেশের শীর্ষ নেতা এক চুক্তিতে একমত হয়েছেন বলে জানান মুন। দক্ষিণ কোরিয়ার প্রেসিডেন্ট মুন জায়ে-ইনের তিন দিনব্যাপী পিয়ংইয়ং সফরকালে এ চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় বলে আজ বুধবার বিবিসিতে প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা যায়।

কিম এ বৈঠককে কোরীয় উপদ্বীপে সামরিক শান্তি নিশ্চিত করার পথে একটি বড় অগ্রগতি হিসেবে অভিহিত করেছেন। আগামীতে দক্ষিণ কোরিয়ার রাজধানী সিউল সফরের ব্যাপারেও তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। সে ক্ষেত্রে কিম হবেন প্রথম কোনো উত্তর কোরীয় নেতা, যিনি দক্ষিণ কোরিয়ায় সফরে যাবেন।

বৈঠকে দুই কোরিয়া নিজেদের মধ্যে রেল যোগাযোগ স্থাপন, স্বাস্থ্য খাতে পারস্পরিক সহায়তা ও দুই দেশে বাসকারী বিচ্ছিন্ন পরিবারগুলোর পুনর্মিলনের ব্যাপারেও পরিকল্পনা করেন।

চুক্তি স্বাক্ষরের পরে মুন বলেন, বিশেষজ্ঞদের উপস্থিতিতে স্থায়ীভাবে তংচাং-রি ক্ষেপণাস্ত্র ইঞ্জিন পরীক্ষাকেন্দ্র বন্ধের ব্যাপারে কিম সম্মতি দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি ইয়ংবিয়ন পরমাণু গবেষণা কেন্দ্রটি বন্ধেও আগ্রহী, যদি যুক্তরাষ্ট্রও সমানভাবে উদ্যোগী হয়। দুই কোরিয়া ২০৩২ সালে যৌথভাবে গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজনের ব্যাপারেও উদ্যোগী হবে বলে জানান মুন। গত এপ্রিলে মুনের সঙ্গে ঐতিহাসিক প্রথম বৈঠকের পর এ নিয়ে এযাবৎ তিনটি বৈঠক করলেন কিম।

কোরীয় উপদ্বীপে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিশ্চিত করার ব্যাপারে চলতি বছরের জুনে দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যস্থতায় সিঙ্গাপুরে একটি বৈঠক হয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ও কিমের মধ্যে। বৈঠকে পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ বিষয়ে দুই নেতার মধ্যে সফল আলোচনা হয় বলে সে সময় ট্রাম্প দাবি করেন। কিন্তু নিরস্ত্রীকরণের আলোচনা হলেও তা কবে নাগাদ কীভাবে তা করা হবে, সে বিষয়ে স্পষ্ট কোনো আলোচনাই হয়নি উল্লেখ করে ট্রাম্পকে সমালোচনা করেন তাঁর বিরোধীরা। নিরস্ত্রীকরণ প্রক্রিয়ার সাফল্য নিয়ে সংশয় পোষণ করেন তাঁরা।

পরবর্তী সময়ে উত্তর কোরিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের পারস্পরিক সম্পর্ক উন্নয়ন ও পরমাণু নিরস্ত্রীকরণ নিয়ে বিভিন্ন সময় দুই দেশেরই উচ্চপর্যায়ে কথাবার্তা চলতে থাকে। দুই দেশের মধ্যে নাটকীয় টানাপড়েন ও সম্পর্কের উন্নয়নের মাঝেই উত্তর কোরিয়া নিজের পরমাণু নিরস্ত্রীকরণের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। এটিকে নিরস্ত্রীকরণের ব্যাপারে কিমের আন্তরিকতা হিসেবেই দেখছে দক্ষিণ কোরিয়া ও ডোনাল্ড ট্রাম্প।