প্রচ্ছদ রাজনীতি ইভিএম নিয়ে ইসিকে বিএনপির হুঁশিয়ারি

ইভিএম নিয়ে ইসিকে বিএনপির হুঁশিয়ারি

একাদশতম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের জন্য নির্বাচন কমিশন যে উদ্যোগ নিয়েছে, সে বিষয়ে কমিশনকে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএনপি।

বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘হঠাৎ করে কী ঘটলো, কী কারণে, কার নির্দেশে, কাকে নির্বাচনে বিজয়ী করার পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্বাচন কমিশন গোপনে তাড়াহুড়া করে এই বিতর্কিত এবং সারা বিশ্বে প্রায় পরিত্যক্ত ইভিএম যন্ত্র কেনার জন্য উঠেপড়ে লেগেছে?’

‘দেশের জনগণ যেকোনো মূল্যে নির্বাচন কমিশনের এই অপতৎপরতা অবশ্যই প্রতিহত করবে। এই বিতর্কিত যন্ত্র কেনার জন্য ব্যয়িত প্রতিটি পয়সা কমিশনের কর্তাদের ব্যক্তিগত দায় হিসেবে গণ্য হবে। এই অপকর্মের সম্পূর্ণ দায়ভার নির্বাচন কমিশকে বহন করতে হবে।’

ইসি কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা আবারও হুঁশিয়ার করছি, অবিলম্বে ইভিএম/ডিভিএম ক্রয়ের উদ্যোগ পরিত্যাগ করুন। নির্বাচন কমিশনের প্রতি জনগণের আস্থাহীনতাকে আরো ঘনীভূত করবেন না। জনগণের কথা ভাবুন, এখনো সময় আছে। তা না হলে যেকোনো উদ্ভুত পরিস্থিতির জন্য নির্বাচন কমিশনই দায়ী থাকবে।’

‘আমরা নির্বাচন কমিশনকে দৃঢ়ভাবে বলতে চাই, এই ডিজিটাল কারচুপির পথ থেকে সরে আসুন। অন্যথায় ষড়যন্ত্রকারীদের প্রত্যেককে ব্যক্তিগতভাবে এই অপতৎপরতার জন্য মূল্য দিতে হবে।’

সরকারি আর্থিক শৃঙ্খলা ও নিয়মনীতি উপেক্ষা করে অতি দ্রুত প্রকল্পটি বাস্তবায়নের অপপ্রয়াস চালাচ্ছে অভিযোগ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘নির্বাচন কমিশন যেখানে ২০১০ সালে ১০ হাজার টাকা মূল্যে একটি ইভিএম মেশিন ক্রয় করেছিল সেখানে আজ ২০ গুণ বেশী দামে প্রতিটি ইভিএম মেশিন ২ লাখ ৫ হাজার টাকায় ক্রয় করতে চাচ্ছে। এটা জনগণের অর্থ লোপাটের আরেকটি উদ্যোগ বৈ আর কিছুই নয়। এটি হচ্ছে আসলে সরকার ও কমিশনের একটি অশুভ পার্টনারশিপ।’

ইসি সচিবের সমালোচনা করে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘একজন চরম দলবাজ ও দুর্নীতিপরায়ণ কর্মকর্তা হেলালুদ্দীনকে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব পদে বসানো হয়েছে। এই সচিবই গণমাধ্যমে বলেছে, আরপিও সংশোধন করা হবে না। তাহলে, কেন আরপিও সংশোধন করে ইভিএম ব্যবহারের উদ্যেগ গ্রহণ করা হচ্ছে? কারা নেপথ্যে কলকাঠি নাড়ছে?’

ইভিএম নিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ নেতিবাচক অভিজ্ঞতার কারণে এই পদ্ধতি বর্জন করেছে জানিয়ে সেসব দেশের উদাহরণ তুলে ধরেন বিএনপির মহাসচিব।

ইভিএম ব্যবহারের উদ্যোগ থেকে সরে না আসলে বিএনপির কী করবে- প্রতিক্রিয়া জানতে চাইলে এক প্রশ্নের জবাবে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘তারা ইভিএম ব্যবহার করতে পারবে না।’

সংবাদ সম্মেলনের মাঝখানে ক্যালিফোর্নিয়া ইউনিভার্সিসিটির প্রফেসর আইটি বিশেষজ্ঞ ম্যাট বিশপের সঙ্গে স্কাইপে ইভিএম-এর কার্যকারিতা জানতে চায় বিএনপি। এ সময় বিশপ বলেন, ‘ইভিএম মেশিন খুব সহজেই টেম্পারিং করে ফল পাল্টে দেওয়া সম্ভব। তা ছাড়া এটি ক্রয় থেকে শুরু করে কাজে লাগানোর আগ পর্যন্ত অনেকগুলো প্রক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে যাবে। সুতরাং তৃতীয় পক্ষ দ্বারা এটি হ্যাক হওয়াও সম্ভব।’

এ সময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, অবসরপ্রাপ্ত সেনা প্রধান মাহবুবুর রহমান, ড. আবদুল মঈন খান, আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।