প্রচ্ছদ আর্ন্তজাতিক আসামের নাগরিকত্ব তালিকা নিয়ে গৃহযুদ্ধের হুঁশিয়ারি মমতার

আসামের নাগরিকত্ব তালিকা নিয়ে গৃহযুদ্ধের হুঁশিয়ারি মমতার

ভারতের পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জি আসামের নাগরিকত্ব তালিকা থেকে ৪০ লাখ মানুষকে বাদ দেয়ায় সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন। তিনি হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেছেন, সরকারের এই পদক্ষেপ দেশকে ‘গৃহযুদ্ধ ও রক্তস্নানের’ দিকে নিয়ে যাবে।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি জানায়, মঙ্গলবার মমতা প্রশ্ন তুলেছেন- ‘আসামে তারা থাকবে কিভাবে? ওরা খাবার, আশ্রয়, স্কুল পাবে কোথায়?’

ক্ষমতাসীন বিজেপি দলের সমালোচনা করে মমতা বলেন, ‘ওরা দেশের মানুষের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে চাইছে। এই পরিস্থিতি মেনে নেয়া যায় না। দেশে গৃহযুদ্ধ লাগবে, রক্তের নদী বয়ে যাবে।’

অন্যদিকে সন্ধ্যায় এক সংবাদ সম্মেলনে বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ মমতার বক্তব্যের পাল্টা সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘মমতা বলছেন দেশে গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি। এই বক্তব্যের ব্যাখ্যা দিন মমতা। কোন আশঙ্কা থেকে একথা বলছেন তিনি? বিষয়টি স্পষ্ট করে বলুন। ভোট ব্যাংকের রাজনীতি করছেন মমতা।’

দিল্লিতে অবস্থানরত মমতা পরে অমিত শাহের জবাবে বলেন, ‘কে ভারতীয় তা নির্ধারণ করার ওরা করে? শুধু বিজেপির লোকেরাই ভারতীয়, আর বাকি সব অভারতীয়! ভারতীয় রাজনীতির নাম হচ্ছে সহনশীলতা। ভারতীয় রাজনীতির নাম হচ্ছে গণতন্ত্র।’

এদিকে সোমবার বিজেপির পশ্চিমবঙ্গ শাখার প্রধান বলেন, তার দল ওই রাজ্যে ক্ষমতায় গেলে সেখানেও আসামের মতো তালিকা তৈরি করা হবে।

মমতা বিজেপির এই বক্তব্যেরও তীব্র সমালোচনা করে বলেন, ‘ওরা কি পশ্চিমবঙ্গের অভিভাবক? পশ্চিমবঙ্গে কী হবে তা ঠিক করার ওরা কে? পশ্চিমবঙ্গে এখনো সরকার আছে।’

ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদের বংশধররা স্থান পাননি সদ্য প্রকাশিত এবং বহু প্রতীক্ষিত আসামের জাতীয় নাগরিক পঞ্জি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনস বা এনআরসি) তালিকায়। এই তথ্য আজ দিল্লিতে অনুষ্ঠিত সর্বভারতীয় ক্যাথলিক বিশপ কনফারেন্সে তুলে ধরেন মমতা।

তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ফখরুদ্দিন আলি আহমেদের পরিবারের সদস্যরাও নেই এই তালিকায়! আমার আর কিছু বলার নেই। অবশ্য অনেকেরই তো নাম নেই।’

সোমবার আসামের এনআরসির চূড়ান্ত খসড়া প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই সরকার এবং বিরোধী দলগুলোর মধ্যে তীব্র মতভেদ দেখা দিয়েছে। যে ৩.২৯ কোটি বাসিন্দা নাগরিকত্বের দাবি জানিয়ে আবেদন করেছিলেন, তাদের মধ্যে ২.৮৯ কোটির স্থান হয়েছে তালিকায়। বাদ পড়েছে ৪০ লাখ।