প্রচ্ছদ জাতীয় আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস

আজ বিশ্ব শরণার্থী দিবস

২০১৭ সালে ২৭ লাখেরও বেশি শরণার্থী নিজ দেশ থেকে অন্য দেশে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়েছে। এদের ৮৮ শতাংশই মাত্র তিনটি দেশ দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, মিয়ানমারের।

তবে শরণার্থীদের আশ্রয়দানকারী দেশের মধ্যে বাংলাদেশ দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংখ্যক শরণার্থীকে আশ্রয় দিয়েছে। এই প্রতিবেদন জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা- ইউএনএইচসিআর এর।

বিশ্ব শরণার্থী দিবস আজ। প্রতি বছর জুন মাসের ২০ তারিখ বিশ্বজুড়ে শরণার্থীদের অমানবিক অবস্থানের প্রতি আন্তর্জাতিক নেতৃবৃন্দের সচেতনতা সৃষ্টির জন্য পালন করা হয় বিশ্ব শরণার্থী দিবস।

২০০০ সালের ৪ ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ২০০১ সালে থেকে দিবসটি পালিত হচ্ছে। তার আগে ২০০০ সাল পর্যন্ত আফ্রিকান শরণার্থী দিবস নামে বিভিন্ন দেশে দিবসটি পালিত হয়ে আসছিল।

ইউএনএইচসিআর এর এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, শরণার্থী আশ্রয়দাতা দেশের মধ্যে তুরস্ক নতুন শরণার্থী নিবন্ধনের সংখ্যায় সবচেয়ে বৃহত্তম। দেশটি সিরিয়ার ছয় লাখ ৮১ হাজার অধিবাসীদের অস্থায়ী সুরক্ষা প্রদান করেছিল। তারপরই শরণার্থী সংখ্যার মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ বাংলাদেশ। ২০১৭ সালে মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে নতুন করে আশ্রয় নেওয়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গার সংখ্যা ছয় লাখ ৫৫ হাজার ৫০০।

কক্সবাজার জেলায় বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশের ফলে স্থানীয় বাসিন্দা ও সম্পদের ওপর তীব্র চাপ সৃষ্টি হয়েছে।

বিশ্ব শরণার্থী দিবসকে সামনে রেখে প্রতি বছরই প্রকাশিত হয় ইউএনএইচসিআর-এর গ্লোবাল ট্রেন্ডস রিপোর্ট। এতে বিশ্বব্যাপী জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুতির ওপর ইউএনএইচসিআর, সরকার ও অন্যান্য সহযোগী সংস্থা কর্তৃক সংগৃহীত তথ্য তুলে ধরা হয়।

এ বছর প্রকাশিত বাৎসরিক গ্লোবাল ট্রেন্ডস রিপোর্টে বলা হয়, বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রাষ্ট্রহীন এবং উদ্বাস্তু রোহিঙ্গাদের আন্তর্জাতিক সুরক্ষা প্রয়োজন। গত আগস্টে মিয়ানমারে নৃশংস সহিংসতা চলাকালে বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠ শরণার্থী বাংলাদেশে আসে। সে সময় থেকে প্রতিদিন কয়েক হাজার শরণার্থী বাংলাদেশে অনুপ্রবেশ করে, যা গত দুই দশকের মধ্যে এই অঞ্চলে সবচেয়ে বড় এবং দ্রুততম শরণার্থী প্রবাহ ছিল। কক্সবাজারের কুতুপালং, বালুখালি এখন বিশ্বের বৃহত্তম এবং সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ শরণার্থী আশ্রয়স্থল। ঘনবসতিপূর্ণ আশ্রয়কেন্দ্রে দুর্যোগময় আবহাওয়ার সময় বিশেষ করে মে ও সেপ্টেম্বরের মধ্যে বর্ষা মৌসুমে নিরাপত্তাজনিত ঝুঁকি বাড়ছে।

বাংলাদেশে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের একটি বৃহৎ অংশ ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে। তাদের অর্ধেকের বেশির বয়স ১৮ বছরের নিচে, অর্ধেকের বেশি নারী ও মেয়ে শিশু এবং এক তৃতীয়াংশ পর্যন্ত পরিবারের নিরাপত্তা ঝুঁকিতে রয়েছে বলে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের অনেকেই নিজ দেশে যৌন নির্যাতন এবং মানসিক আঘাতসহ চরম সহিংসতার মুখোমুখি হয়েছেন।

ইউএনএইচসিআর এই রিপোর্টে মিয়ানমার সরকারকে রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের নিরাপত্তা ও মৌলিক মানবাধিকার নিশ্চিত করা, নাগরিকত্ব প্রদানসহ সমস্যার মূল কারণগুলো সমাধানের আহ্বান জানিয়েছে।